প্রায় ২ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের মামলায় সিআইডি অফিসে হাজিরা দিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তণ উপাচার্য নিমাই চন্দ্র সাহা। আজ সকাল ১০.৩৩ মিনিট নাগাদ আইনজীবিকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বর্ধমানের ভাঙাকুঠী এলাকায় অবস্থিত সিআইডি অফিসে আসেন। আর্থিক তছরুপের মামলায় তদন্তের স্বার্থে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডঃ নিমাই চন্দ্র সাহা-কে ১৮ জুন তলব করা হয়েছিলো সিআইডির তরফে। সিআইডি তলবে নির্দিষ্ট করা দেওয়া সময়েই তিনি হাজির হন অফিসে। যদিও এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।
মেয়াদের পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ টি ফিক্সড ডিপোজিট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের সই ও অ্যাডভাইসড নোট নকল করে টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে।ফিনান্স অফিসার ও রেজিস্ট্রারের সই নকল করে ফিক্সড ডিপোজিট ভেঙে অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করে নেওয়ার অভিযোগ উঠে।বর্ধমানের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে ২১.৫৫ লক্ষাধিক টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙানোর চেষ্টা করা হয়।ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সন্দেহ হওয়ায় নিয়মানুযায়ী স্বাক্ষরকারীর স্বাক্ষর সংক্রান্ত সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এধরনের কোনো অ্যাডভাইসড্ নোট ইস্যুই করে নি।।

এরপরই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বর্ধমান থানায় এফআইআর করলে বিশ্ববিদ্যালয়ও অনান্য ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষকে চিঠি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট সম্বন্ধে জানতে চাইলে বর্ধমান শহরের জেলখানা মোড়ের একটি রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাঙ্কের শাখা থেকে তিনটি ফিক্সড্ ডিপোজিট ভাঙিয়ে অন্য অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা অ্যাকাউন্টে নিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। এরপরই তৎকালীন রেজিস্ট্রার সুজিত কুমার চৌধুরী বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পরবর্তী কালে তদন্তভার নেয় সিআইডি।ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন-কে গ্রেপ্তারও করে সিআইডি।এবার সেই তদন্তেই চাঞ্চল্যকর মোড়।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য নিমাই চন্দ্র সাহা-কে জিজ্ঞাসাবাদের করার জন্য ডেকে পাঠানো হল সিআইডি তরফে। তাঁকে সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে বর্ধমানের সিআইডি অফিসে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়।বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে কিভাবে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গেল তা নিয়ে তাকে জানতে যাওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে।
Read More – বাজ পড়ার সময় ফোনে কথা বলেন! কী হতে পারে জেনে নিন
এই কেসের মামলাকারী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী রেজিস্ট্রার দেবমাল্য ঘোষ জানান,আমার মামলার পরিপেক্ষিতে ইডি সক্রিয় হয়েছে।ইডির হাত থেকে রক্ষার করার জন্য সিআইডি ওঁনাকে নতুন করে ডেকে পাঠাতে পারে।তবে এটা আমি কখনই মনে করি না যে উপাচার্যের অগোচরে এত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে উঠে যেতে পারে।তদন্ত যদি ঠিকভাবে হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের অনেক ঘোটালা (দুর্নীতি) বেড়িয়ে আসবে বলে তিনি জানান।