গত দশকে ভারত, রাশিয়া ও চিন বহুবার RIC (Russia-India-China) মেকানিজমের অধীনে বৈঠকে অংশ নিয়েছে। তবে ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষ ও কোভিড মহামারির পর সেই আলোচনা কার্যত থেমে যায়। এখন আবার আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারসাম্য ফেরাতে রাশিয়া ও চিন এই মেকানিজমকে পুনরুজ্জীবিত করতে চায়। তাদের মতে, এই ত্রিপাক্ষিক মঞ্চ কেবল এই তিন দেশের নয়, গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার পক্ষে সহায়ক হতে পারে।
Read more – সিরিয়ায় ইসরায়েলের অভিযানে তিন টনের বেশি অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার
চিন মনে করে, QUAD জোট মূলত তাদের ঘিরে রাখতেই তৈরি হয়েছে। তাই ভারতকে আবার কাছে টানতে, এবং রাশিয়ার মাধ্যমে কূটনৈতিক চাপ তৈরি করে পশ্চিমা প্রভাব হ্রাস করতে চায় বেইজিং। রাশিয়াও দীর্ঘদিন ধরে ভারতকে নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য কৌশলগত সঙ্গী হিসেবে দেখে এসেছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী সম্প্রতি RIC-এর সক্রিয়তা ফেরানোর পক্ষে মন্তব্য করেছেন।
যদিও ভারত এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে সরাসরি কিছু জানায়নি, পররাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, “উপযুক্ত সময় ও সম্মতিতেই বৈঠকের তারিখ স্থির হবে।” RIC-এর সম্ভাব্য পুনরুজ্জীবন আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে। যেখানে পশ্চিমা জোটগুলির প্রভাবের পাশাপাশি উঠে আসতে পারে এক নতুন বিশ্বব্যবস্থার বিকল্প ধারা। তবে ভারতের অবস্থান নির্ভর করবে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ, নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক সমীকরণের উপর।
বর্তমানে ভারত যেমন BRICS ও SCO-এর সদস্য, তেমনই QUAD-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফলে দুই মেরুর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাই ভারতের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ। তবে যদি ভারত RIC-এ সক্রিয়ভাবে ফিরে আসে, তাহলে গড়ে উঠতে পারে এক নতুন ইউরেশিয়ান ত্রিশক্তি—প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ রাশিয়া, বৃহৎ জনসংখ্যার দুই দেশ চিন ও ভারত, এবং শক্তিশালী কৌশলগত অবস্থান।