পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের কনকপুর গ্রামে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। কৃষক সত্যনারায়ণ ঘোষ (৫০), পাঁচ বছর ধরে চাষে একের পর এক লোকসানে জর্জরিত হয়ে আত্মহত্যা করেন। বুধবার সকাল দশটা নাগাদ, বাড়ি থেকে কিছু দূরের কুঁড়েঘরে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
মৃত ব্যক্তির পরিচয় ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট
- মৃত ব্যক্তি: সত্যনারায়ণ ঘোষ
- বয়স: ৫০
- পরিবার: স্ত্রী এক বছর আগেই মারা গেছেন
- ভাই: লক্ষ্মীনারায়ণ ঘোষ
স্ত্রী বিয়োগের পর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। চাষে একের পর এক ক্ষতিতে দেনার পরিমাণ বেড়েই চলেছিল।
দেনার পরিমাণ ও চাপ
দেনার কারণগুলো ছিল:
- এলাকা মহাজন ও দোকানদারদের কাছ থেকে ধার
- প্রতিবার ফসল নষ্ট হওয়া
- বাজারে ভালো দাম না পাওয়া
গত বছর ঘটেছে:
- আলু পচে যাওয়া
- ধান নষ্ট হওয়া
- বৃষ্টির কারণে তিল চাষে ক্ষতি
বুধবার সকালবেলা গরু মাঠে বেঁধে বাড়ি ফিরছিলেন সত্যনারায়ণ। এরপর দীর্ঘক্ষণ তার খোঁজ না পেয়ে ভাই খুঁজতে শুরু করেন। শেষে বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে কুঁড়েঘরে গলায় গামছা দেওয়া অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।ভারতের জাতীয় অপরাধ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (NCRB) তথ্য অনুযায়ী, 2022 সালে পশ্চিমবঙ্গে কৃষক আত্মহত্যার হার তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও দেনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উদ্বেগ বাড়ছে।
সত্যনারায়ণ ঘোষের আত্মহত্যা কেবল একটি ব্যক্তিগত দুর্যোগ নয়, এটি বাংলার কৃষকসমাজের ভিতরে চলা সংকটের প্রতিচ্ছবি। সরকারের উচিত দ্রুত কৃষিঋণ পুনর্গঠন ও সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া। আপনি যদি আশেপাশে এমন কোনও কৃষক দেখেন, যিনি সমস্যায় আছেন—তাকে মানসিক সহায়তা ও প্রশাসনিক সহযোগিতা পেতে সাহায্য করুন।