হিমাচল প্রদেশে টানা বর্ষণে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা ইতিমধ্যেই রাজ্যের সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ি ধস ও আকস্মিক বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪৩ জনের, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩৭ জন। প্রশাসনের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে কারণ বহু এলাকা এখনও উদ্ধারকর্মীদের আওতার বাইরে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা মান্ডি, যেখানে একাই নিখোঁজ ৪০ জনের বেশি।
রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যেই ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যদিও বাস্তব চিত্র আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। ২৫০-টিরও বেশি রাস্তা সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে, ৫০০-র বেশি বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার বিকল হয়েছে, এবং প্রায় ৭০০টি জল সরবরাহ প্রকল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত — ফলে বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সংকট চরমে।
Read more – তুমুল ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস, দুর্যোগ থেকে এখনই মুক্তি নয় !
বহু গ্রাম এবং শহর কার্যত বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিমান বাহিনী আকাশপথে দুর্গত এলাকায় খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠাচ্ছে, পাশাপাশি খোলা হয়েছে একাধিক ত্রাণ শিবির। প্রশাসনের উদ্যোগে এখনও পর্যন্ত মোট ৪০২ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মান্ডি জেলার বাসিন্দা।
ইতিমধ্যে আবহাওয়া দপ্তর রাজ্যে ৭ জুলাই পর্যন্ত ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে, যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল ও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। রাজ্যজুড়ে এখন চলছে এক চরম লড়াই—এটি শুধু দুর্যোগের বিরুদ্ধে নয়, বরং প্রতিটি প্রাণ বাঁচানোর, প্রতিটি ঘর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। এই সংকটের মুহূর্তে হিমাচলের মানুষদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের মানবিক কর্তব্য।