ধর্মীয় বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে গুসকরা শহর ফের একবার দেখাল সম্প্রীতির অনন্য নজির। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলুটিয়া এলাকায় দিঘার জগন্নাথ ধামের মহাপ্রসাদ গ্রহণ করলেন বহু মুসলিম পরিবার। মঙ্গলবার সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন দেখা যায় মুসলিম বাসিন্দাদের, যাঁরা শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রসাদ কপালে ঠেকিয়ে গ্রহণ করেন।
এই কর্মসূচির তদারকিতে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর সাধনা কোনার। সরকারের তরফে পাঠানো প্রসাদ রেশন ডিলারদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। শেখ নজরুল হক, শেখ মহম্মদ আলি, ইউনুস শেখ–সহ বহু মুসলিম বাসিন্দা জানান, “সব ধর্মের প্রতি আমাদের সমান শ্রদ্ধা আছে। সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতেই আমরা ভক্তিভরে প্রসাদ নিয়েছি।”
Read more – নদীর জলে ডুবে ১৪ ট্রাক, ৫ দিনেও উদ্ধার হয়নি – মালিকদের সর্বনাশের আশঙ্কা
ইউনুস শেখ বলেন, “পরিবারের সবাই প্রসাদ খেয়েছে, খুবই সুস্বাদু লেগেছে। এমনকি জগন্নাথের ছবিও বাড়িতে রাখা হয়েছে।” অনেকেই জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে দিঘার জগন্নাথ মন্দির দর্শনের ইচ্ছাও রয়েছে তাঁদের। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই এলাকায় বহু বছর ধরেই হিন্দু-মুসলিম পরস্পরের উৎসবে যোগ দেন। শ্মশান ও কবরস্থান পাশাপাশি, শবদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ধর্মভেদে কোনো বিভাজন নেই।
মসজিদের ইমাম জানান, “প্রসাদ গ্রহণ ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। তবে অনেকেই সরকারের পাঠানো প্রসাদ নিয়েছেন। এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। পুরপ্রধান কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, “গুসকরা শহরই সম্প্রীতির প্রতীক। মুসলিমদের উদ্যোগে দুর্গা ও কালীপুজো যেমন হয়, তেমনই হিন্দুরাও অংশ নেন পীর উরসে। এখানকার মানুষ বারবার প্রমাণ করে, ধর্ম নয়, মানবতাই বড় পরিচয়। ই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, গুসকরা শুধু একটি শহর নয় – এটি মিলেমিশে থাকার এক শিক্ষার ক্ষেত্র।