সকালটা শুরু হয়েছিল ঝকঝকে রোদের আলোয়। অনেকেই ভেবেছিলেন, বুঝি বৃষ্টি কেটে গেছে। কিন্তু প্রকৃতির মেজাজ বর্ষায় বদলাতে সময় লাগে না। আর তাই, হাওয়া অফিসের সর্বশেষ পূর্বাভাস বলছে—আকাশের মুড এখন বেশ সিরিয়াস! উত্তর বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলেছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। যার প্রভাবেই আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই নিম্নচাপ সরাসরি প্রভাব ফেলবে দক্ষিণবঙ্গের ওপর। বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার—এই দু’দিন রাজ্যের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই মুহূর্তে শহর কলকাতায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বেশ প্রকট। এদিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৩৩.২ ডিগ্রি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৭০ থেকে ৯২ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। ফলে, ঘেমে একেবারে অস্থির অবস্থা। গরম কমার সম্ভাবনা আপাতত নেই।
Read More – http://বর্ধমানে জেলেদের জালে কি আটকে পড়লো আফ্রিকান অ্যানাকোন্ডা?
তবে রাত গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার আমেজ বদলাতে শুরু করবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব-পশ্চিম বর্ধমানের কিছু অংশে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হতে পারে বুধবার রাত থেকেই। বৃহস্পতিবার বৃষ্টি আরও জোরালো হতে পারে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রয়েছে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। এছাড়া কলকাতা-সহ অন্যান্য জেলাতেও হতে পারে দু-এক পশলা ভারী বৃষ্টি।
শুক্রবারেও দক্ষিণবঙ্গের আকাশ থাকবে মেঘলা। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া জেলাতেও হতে পারে ভারী বৃষ্টি। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিও হতে পারে বিভিন্ন এলাকায়।
এই নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রের অবস্থাও হতে চলেছে উত্তাল। তাই বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই থেকে মৎস্যজীবীদের জন্য সমুদ্রে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, নদীর জলস্তরও বাড়তে পারে, যার ফলে কিছু নিচু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
উইফা নামের এক বিধ্বংসী ঝড় সম্প্রতি আছড়ে পড়েছে চিন ও ভিয়েতনামে। সেই ঘূর্ণিঝড়ের অংশই এসে তৈরি করতে চলেছে ঘূর্ণাবর্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরে। এর পরেই তৈরি হবে নিম্নচাপ — যার জেরে টানা দু’দিন দক্ষিণবঙ্গে অস্বস্তির সঙ্গে নামবে ঘনঘোর বর্ষা।