ফলের রাজা আম। এই গ্রীষ্মকালে আমের স্বাদ নেওয়ার মজাই আলাদা। হিমসাগর, ল্যাংড়া, দশেরা,চৌসা, মল্লিকা- সবই অতুলনীয়। এখন এই মিষ্টি ফলে মজেছেন সকলেই। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীরা কি আম খেতে পারেন? তাতে কি লাফিয়ে লাফিয়ে সুগার বাড়তে পারে? অনেকেই ভাবেন আমের প্রাকৃতিক শর্করা ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। এই ধারণা কতটা ঠিক? সাম্প্রতিক গবেষণা ও পুষ্টিবিদদের ব্যাখ্যা কী বলছে? আপনারা তো জানেন,কোনখাবার শরীরে শর্করার মাত্রা কতটা বাড়ায় তা মাপা হয় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স-এর মাধ্যমে। আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স প্রায় ৫১–৫৬। যা মধ্যম স্তরে পড়ে। অর্থাৎ এটি খুব দ্রুত রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায় না। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল-এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স টেবিল অনুসারে, ৫৫-এর নিচে থাকলে সেই খাবারকে ‘লো গ্লাইসেমিক’ হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ, অল্প পরিমাণ খেলে আম রক্তে হঠাৎ করে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না।
তবে পুষ্টিগুণ ও উপকারিতায় আমের জুড়ি মেলা ভার। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে প্রায় ১৪ গ্রাম শর্করা থাকে। তার মধ্যে আছে ফ্রুকটোজ, গ্লুকোজ এবং সামান্য সুক্রোজ। একই সঙ্গে আমে থাকে ডায়েটারি ফাইবার। এই ফাইবার রক্তে গ্লুকোজ শোষণের গতি কমিয়ে দেয়। জার্নাল অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, আমের “ম্যাঙ্গিফেরিন” নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়াতে সাহায্য করে। তাহলে ডায়াবেটিস রোগীরা কী আম খেতে পারবেন? পারলে কতটা? আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, প্রায় ৭৫–৮০ গ্রাম কাটা আম বা একটি ছোট আকারের আম দিনে একবার খাওয়া যেতে পারে। তবে খালি পেটে বা অন্য কার্বোহাইড্রেট-যুক্ত খাবারের সঙ্গে না খাওয়াই ভাল। তার চেয়ে সন্ধ্যের দিকে হালকা খাবারের পরে আম খান। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে অল্প পরিমাণে সঠিক সময়ে খেলে ডায়াবেটিস রোগীরাও আমের স্বাদ নিতে পারেন।