বর্ষাকাল মানেই একরাশ স্বস্তি, তাপদাহের অবসান ও মনোরম আবহাওয়া। কিন্তু বর্ষা যেমন প্রকৃতিকে সজীব করে তোলে, তেমনই আমাদের শরীরের জন্য বয়ে আনতে পারে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি। কারণ এই সময়ে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায়, যা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক বৃদ্ধির উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।
ফলে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়, আর বাড়ে খাদ্যে বিষক্রিয়া, ডায়রিয়া ও পেটের সমস্যার সম্ভাবনা। এই কারণেই বর্ষাকালে কী খাবেন আর কী খাবেন না, সে বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। পুষ্টিবিদ কিরণ কুকরেজা এমন ৫টি সাধারণ সবজির কথা বলেছেন, যেগুলো বর্ষাকালে এড়িয়ে চলা উচিত।
- ১. সবুজ শাকসবজি: পালং শাক ও মেথির মতো শাক আর্দ্রতা ও ময়লা দ্রুত শোষণ করে। বর্ষাকালে এগুলো ব্যাকটেরিয়া ও পোকামাকড়ের আক্রমণের শিকার হয়। যত ভালোভাবে ধুলেও কিছু ক্ষতিকর কণা থেকে যেতে পারে, যা শরীরের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
- ২. বেগুন: বর্ষায় বেগুনে পোকামাকড়ের প্রকোপ বেশি থাকে, আর খুব সহজেই এটি পচে যেতে পারে। খেলে পেট ফাঁপা, ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে।
- ৩. বাঁধাকপি ও ফুলকপি: এই সবজিগুলোর ভেতরে আর্দ্রতার কারণে ব্যাকটেরিয়া ও পোকা লুকিয়ে থাকতে পারে। ফলে এগুলো থেকে পেটের নানা সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
- ৪. মাশরুম: বর্ষাকালের আর্দ্রতায় মাশরুম দ্রুত নষ্ট হয়। সামান্য নরম বা কালো রঙের মাশরুম খেলে খাদ্যে বিষক্রিয়া হতে পারে।
- ৫. অঙ্কুরিত আলু: আলুতে অঙ্কুর দেখা দিলে তাতে ‘সোলানিন’ নামে বিষাক্ত যৌগ তৈরি হয়, যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে। বর্ষাকালে এমন আলু খাওয়া একেবারে উচিত নয়।
তাহলে কোন সবজি খাবেন?
পুষ্টিবিদের মতে, বর্ষাকালে লাউ সবচেয়ে নিরাপদ সবজি। কারণ এতে আর্দ্রতা কম থাকে, সংক্রমণের ঝুঁকিও কম। এছাড়া পটল ও বিনসও বর্ষাকালের জন্য ভালো পছন্দ। এই সবজিগুলোর সংরক্ষণ সহজ এবং পেটের জন্যও হালকা। বর্ষাকালে খাবার বেছে নিতে একটু বাড়তি সতর্কতা আপনার শরীরকে রাখতে পারে সুস্থ ও সংক্রমণমুক্ত। তাই বৃষ্টির দিনে মন খুশি রাখুন, আর পাতে রাখুন সঠিক সবজি!