প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাডমিরাল ডং জুনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সীমান্ত উত্তেজনা হ্রাস এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে রাজনাথ সিং চার দফা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
প্রথমত, তিনি ২০২৪ সালের বিচ্ছিন্নতা পরিকল্পনা কঠোরভাবে অনুসরণের ওপর জোর দেন, বিশেষ করে লাদাখ সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াকে অগ্রাধিকার দিতে বলেন। দ্বিতীয়ত, নিয়মিত কূটনৈতিক ও সামরিক সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে করে সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং যোগাযোগ বজায় থাকে।
Read more – ধেয়ে আসছে দুর্যোগ, আপনার জেলায় কী পরিস্থিতি হবে জেনে নিন
তৃতীয়ত, সীমান্ত নির্ধারণ ও সীমাঙ্কন প্রক্রিয়া দ্রুততর করার পাশাপাশি হটলাইন ও অন্যান্য যোগাযোগ চ্যানেল জোরদারের প্রস্তাব দেন রাজনাথ। চতুর্থ দফায়, বিদ্যমান বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনাকে নতুন কাঠামোতে রূপান্তর করে যৌথ পর্যবেক্ষণ কমিটি ও দ্রুত সমন্বয় প্রক্রিয়া চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ নিয়েও মুখ খোলেন রাজনাথ সিং। তিনি স্পষ্ট জানান, ভারত সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কোনও নমনীয়তা দেখাবে না এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের দৃঢ় অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।
বৈঠকের পরে এক্স-এ রাজনাথ সিং লেখেন, “চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাডমিরাল ডং জুনের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতের দিকে নজর রেখে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” সেইসঙ্গে তিনি কৈলাস মানসরোবর যাত্রা পুনরায় শুরুর সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে মিথিলার ঐতিহ্যবাহী মধুবনী চিত্রকর্ম উপহার দিয়ে ভারত তার সাংস্কৃতিক সৌহার্দ্য প্রকাশ করে। চীনের পক্ষ থেকেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে। তাদের সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারত সংঘর্ষ চায় না এবং পারস্পরিক সংলাপেই আস্থা রাখে।
এই বৈঠক এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন ভারত এসসিও-র যৌথ সন্ত্রাসবিরোধী নথিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায়। ওই নথিতে পাকিস্তান ও চীন পরোক্ষভাবে ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহালগামে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের হাতে ২৬ জনের হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ ছিল না বলেও ভারত আপত্তি তোলে ।