হাঁটুর ব্যথা আজকাল শুধু বয়স্কদের সমস্যা নয়, তরুণরাও এতে ভুগছেন। চিকিৎসক নেনে মনে করিয়ে দেন— আমাদের রোজকার জীবনধারা ও অভ্যাসই হাঁটুর ক্ষতির জন্য অনেকাংশে দায়ী। অতিরিক্ত ওজন, ভুল পদ্ধতিতে ব্যায়াম, এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাব হাঁটুকে দুর্বল করে তোলে। শরীরের ওজন এক কেজি বাড়লে হাঁটুর উপর পড়ে চার কেজি চাপ। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি। অতিরিক্ত হাঁটা, দৌড়, বা জাম্পিং স্কোয়াটের মতো ব্যায়াম প্রশিক্ষকের পরামর্শ ছাড়া করা উচিত নয়। বরং সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, বা হালকা হাঁটা হাঁটুর জন্য উপকারী। ব্যথা হলে গরম বা বরফ সেঁক দেওয়া যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ বা ইনজেকশন নয়। ব্যথা বাড়লে ট্রেডমিল নয়, বরং কারণটি আগে বোঝা দরকার। সঠিক সময় সচেতন না হলে অস্টিয়োআর্থ্রাইটিসের মতো জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার ফলে মধ্য ত্রিশেই হাঁটু প্রতিস্থাপন পর্যন্ত করতে হতে পারে।
হাঁটু ফোলা বা ব্যথা বাড়লে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেক সময় হাঁটুর জয়েন্টে ‘ভিসকো সাপ্লিমেন্টেশন’ ইনজেকশন ভালো কাজ দেয়, কিন্তু তা শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে নেওয়া উচিত। মাটিতে বসে কাজ, দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসে থাকা কিংবা ভারী বস্তু ওঠানো থেকেও হাঁটুর ক্ষতি হতে পারে। তাই নিয়মিত স্ট্রেচিং, পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ, আরামদায়ক জুতো পরা— এই অভ্যাসগুলি গড়ে তুললে হাঁটু দীর্ঘদিন সুস্থ থাকবে। নিজের শরীরকে বোঝা, সচেতনভাবে শরীরচর্চা করা আর হাঁটুকে বিশ্রাম দেওয়া—এই তিনটি চাবিকাঠি ধরেই হাঁটুর সুস্থতা রক্ষা সম্ভব। তাই আজ থেকেই একটু ভাবুন, বদল আনুন অভ্যাসে। কারণ, সুস্থ হাঁটুই আপনাকে আগামীর পথ দেখাবে। সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন— হাঁটু ভালো থাকলে চলাফেরা থাকবে স্বাভাবিক।