বর্ধমানে দামোদরে জেলেদের জালে আটকে পড়লো বিরল প্রজাতির সাপ। এলাকায় চাউর হয় আফ্রিকান অ্যানাকোন্ডা জেলেদের জালে আটকে পড়েছে, দামোদরের সদরঘাট পাড়ে ভিড় জমান স্থানীয়রা। অনেকে আবার মোবাইলে ক্যামেরা বন্দিও করেন।
প্রতিদিনের মত রবিবারও বর্ধমানের সদরঘাটের কছে দামোদরের মাছ ধরার জন্য জাল পেতেছিলেন স্থানীয় কয়েকজন মৎসজীবি। জাল তুলতেই অবাক হন তারা। জালে আটকে পড়েছে সাপ। সাপটিকে তারা নদীর পাড়ে নিয়ে আসে। এই সাপ তারা এর আগে কোন দিন দেখেননি বলে জানান ওই মৎসজীবিরা। এদিকে এলাকায় প্রচার হয়ে যায় মৎসজীবিদের জালে আটকে পড়েছে আফ্রিকান অ্যানাকোন্ডা। প্রচুর মানুষ সাপটিকে দেখতে ভিড় জমান নদীর পাড়ে। ক্যামেরা বন্দিও করেন অনেকে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাপটি ইন্ডিয়ান রক পাইথন। দামোদরের জলে পাইথনটি ভেসে এসেছিল। রাতেই সাপটি মৎস্যজীবীদের জালে আটকে পড়ে। সকালে জাল টেনে ডাঙায় তোলা হয়। জালের ওজন ভারি থাকায় বড় মাছ উঠেছে বলে মনে করেছিলেন জেলেরা। কিন্তু জাল ডাঙায় তোলার পর পাইথনটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কী কারণে সাপটির মৃত্যু হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
Read more – ২ কোটি টাকার তছরুপ: সিআইডি-র জেরায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য
তাঁরা বলছেন, অনেক সময় নদীতে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা হয়। সেই জালের ফাঁসে দীর্ঘক্ষণ আটকে থেকে সাপটির মৃত্যু হতে পারে। এই সাপটি ইন্ডিয়ান রক পাইথন। ভারতের বৃহত্তম সাপগুলির মধ্যে অন্যতম। ইন্ডিয়ান রক পাইথন মূলত দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। এটি ভারত, দক্ষিণ নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভুটান এবং বাংলাদেশে দেখা যায়। এরা বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে যেমন – তৃণভূমি, জলাভূমি, পাথুরে ঢাল, বনভূমি, খোলা বন এবং নদী উপত্যকায় বাস করে।
পরিত্যক্ত গর্ত, ফাঁপা গাছ, ঘন জলজ উদ্ভিদ এবং ম্যানগ্রোভের ঝোপঝাড়ে এরা লুকিয়ে থাকে। সাধারণত দিনের বেলায় এরা গাছের শাখায় বা রোদে শুয়ে থাকতে পছন্দ করে এবং সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। এই সাপ বিষহীন। এই সাপ নিশাচর এবং মূলত স্থলচর হলেও, প্রয়োজনে গাছে চড়তে পারে। এরা চমৎকার সাঁতারু এবং ৩০ মিনিট পর্যন্ত জলের নিচে শ্বাস ধরে রাখতে পারে। বেশিক্ষণ জলের তলায় জালে জড়িয়ে থাকার কারণেই সাপটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা বিশেষজ্ঞদের।