এই বাংলায় মুড়ির তুল্য খাবার নেই। অনেকেরই বিশেষ পছন্দের।নিয়মিত মুড়ি খান অনেকেই। সকাল সন্ধে টিফিনে নিয়মিত মুড়ি ছাড়া দিন চলে না। তেলেভাজা, চানাচুর দিয়ে মুড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা। ঝালমুড়ি কিংবা চপ সিঙারা চানাচুরের সঙ্গে মুড়ি পেলে বাঙালি সব ভুলতে পারে। মুড়ি সহজপাচ্য। শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। কিন্তু জানেন কি আসলে মুড়ির নামে বিষ খাচ্ছেন আপনি!হ্যা, একদম ঠিক শুনছেন।মুড়িতে মেশানো হচ্ছে শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর ইউরিয়া।তিলে তিলে শরীরকে ঝাঁঝড়া করে দিচ্ছে এই ইউরিয়া। তাহলেই ভাবুন, শরীর ফিট রাখার জন্য মুড়ির নামে কি খাচ্ছেন আপনি?এর ফলে শরীরের কোন মারাত্মক রোগ বাসা বাঁধছে তা কি আপনি জানেন? বাজারে এখন সাদা ধবধবে, ফোলা মুড়ি ছাড়া অন্য মুড়ি কার্যত পাওয়াই যায় না। মেশিনে ভাজা এই মুড়িতেই মেশানো হয় ইউরিয়া। তাতে মুড়ি হয় ধবধবে সাদা। ফোলা ফোলা। ভাজাও হয় তাড়াতাড়ি। জ্বালানি খরচ কমাতেই মুড়ির চালে ইউরিয়া মেশানো হয়। সারের দোকান থেকেই এজন্য কেনা হয় বস্তা বস্তা ইউরিয়া। মুড়ির সঙ্গে সেই ইউরিয়া যাচ্ছে আমার আপনার পেটে।
এক সময় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গ্রামে গ্রামে মুড়ি ভাজা হতো। প্রতি কিলো ভেজা চালে ৪০ গ্রাম নুন মিশিয়ে শুকনো করে বালিতে ভেজে নেওয়া হতো। এখন আধুনিক যন্ত্রে মুড়ি ভাজা হয়। তাতে প্রতি দিন ৩০-৪০ কুইন্ট্যাল মুড়ি তৈরি হয় একেকটি কারখানায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইউরিয়া না-মেশালে প্রতি কুইন্ট্যাল মুড়ি তৈরিতে গড়ে ৩০০-৪০০ টাকার জ্বালানি খরচ হয়। কিন্তু ইউরিয়া মিশ্রিত চালে জ্বালানির খরচ অর্ধেক হয়ে যায়। প্রায় সব ব্যবসায়ীই মুড়িতে ইউরিয়া মেশান। প্রতিযোগিতার বাজারে কম সময়ে বেশি জিনিস তৈরি করতে হলে এ ছাড়া উপায় নেই বলছেন ব্যবসায়ীরা। এমনিতে মুড়ি অ্যাসিডিটি রোধ করে। যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মুড়ি খুবই উপকারী। নিয়মিত মুড়ি খেলে অ্যাসিডিটি কমবে।পেটের সমস্যায় শুকনো মুড়ি কিংবা ভেজা মুড়ি খেলে তাৎক্ষণিক উপকার পাওয়া যায়। এমনকি হজমের সমস্যায় চিকিৎসকেরা প্রায়ই মুড়ি খাওয়ার পরামর্শ দেন। মুড়িতে ভিটামিন বি ও প্রচুর পরিমাণে মিনারেল থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কিন্তু সে তো লালচে হাতে ভাজা মুড়ি। সে মুড়ি আর পাচ্ছেন কোথায়। সাদা ফোলা ফোলা যে মুড়ি খাচ্ছেন, সে তো বিষ। চিকিৎসকরা বলছেন, দীর্ঘদিন এই বিষ শরীরে গেলে তার পরিণতি হতে পারে মারাত্মক।এই ভেজাল খেলে গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দেয়।টানা এই মুড়ি খেলে কিডনির রোগ হতেই পারে।ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে এই মুড়ি।চিকিৎসকরা বলছেন,টানা বহু দিন খাবারের সঙ্গে ইউরিয়া শরীরে গেলে কিডনির সমস্যা, রক্তের সমস্যা, লিভারের সমস্যা সব কিছুই হতে পারে।