এই এলাকায় এখনও শুধুই আদিম মানুষের বসবাস। তারা প্রাচীন কালের মতোই এখনো পশু শিকার করেই দিন চালায়। গাছের ফলমূল খেয়ে মাছ শিকার করে দিন কাটে তাদের।এই এলাকায় তথাকথিত সভ্য মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ আধুনিকতার এই যুগে এখনো কোথায় আছে এমন এলাকা? আমাজন রেইন ফরেস্ট। আমাজনের এই জঙ্গল শুধু পৃথিবীর বৃহত্তম বনাঞ্চলই নয়, জীববৈচিত্রের ঘনত্বের বিচারেও সে শীর্ষে রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৫ কোটি বছরের পুরনো এই জঙ্গলের মাঝ দিয়েই বয়ে গেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন জঙ্গল রহস্যে ঘেরা।আমাজন জঙ্গল মূলত দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত । অ্যামাজন জঙ্গল আয়তনে এতো বিশাল যে এর উপর নিয়ন্ত্রণ আছে ৯টি দেশের।
অ্যামাজনের একটি এলাকা হল ভালদোজাভারি রিজার্ভেশন।এটি একটি সংরক্ষিত এলাকা।এখানেই চৌদ্দটি গ্রাম রয়েছে। সেখানে শুধুই আদিম মানুষের বাস। বাইরের জগতের সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই তাদের।এই জঙ্গলের বাইরে থাকা বিশ্বকে জানার আগ্রহও নেই তাদের।কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন জীবন যাপনেই এখনও অভ্যস্ত তারা।জীববৈচিত্রের ঘনত্বের দিক দিয়েও আমাজন পৃথিবীর শীর্ষ স্থানের অধিকারী। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত অঞ্চলগুলোর মধ্যে ৪০ হাজার প্রজাতির প্রায় ৩ হাজার ৯০০ কোটি উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়াও প্রায় ১৫০০ নতুন প্রজাতির পাখি, প্রায় ৫০০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২ হাজার ২০০ প্রজাতির মাছ, প্রায় ৪০০ প্রজাতির সরীসৃপ আছে। সেইসঙ্গে প্রায় ৫০০ প্রজাতির উভচর প্রাণী এবং প্রায় ২৫ লাখ প্রজাতির পোকামাকড়ের অস্তিত্ব রয়েছে এই জঙ্গলে। তাদের মধ্যেই বাস করছেন এই আদিবাসীরা।
আমাজনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রায় ৫ শতাধিক আদিবাসী গোষ্ঠীর রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০টি গোষ্ঠী এখনো সভ্যতার ছোঁয়া পায়নি। চিন্তা চেতনা সংস্কৃতি আচার বিচার সব দিক থেকেই তারা সেই আদিম যুগেই থেকে গেছে।তাদের এলাকাটি রয়েছে আমাজনের ব্রাজিল অংশে। তাদের বিলুপ্তির পথ থেকে বাঁচাতে এই এলাকায় বাইরের লোকেদের প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে সরকার।স্যাটেলাইট বা আকাশপথে তাদের ভালোমন্দের খবর রাখে সরকার। তবে বর্তমানে অপরিকল্পিতভাবে বন নিধনের কারণে দিন দিন আমাজনের বনভূমি কমছে। এর প্রভাব পড়ছে বিশ্ব উষ্ণায়নে। তাই আমাজন রক্ষায় এখনই বিশ্বমহলকে সোচ্চার হওয়ার দাবী জানিয়ে আসছেন পরিবেশ বিশ্লেষকরা।