চিনের এক নতুন পদক্ষেপ ঘিরে ফের চাপে ভারতের উত্তর-পূর্ব। এবার সীমান্তে সেনা নয়, বরং ব্রহ্মপুত্র নদীর জল weapon হিসাবে ব্যবহার করতে পারে বেজিং— এমনই আশঙ্কা করছেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খাণ্ডু। তিনি জানাচ্ছেন, চিন ইয়ারলুং সাংপো নদীতে (ভারতে যা ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত) বিশাল জলবিদ্যুৎ বাঁধ তৈরি করছে, যা ভবিষ্যতে একটি ভয়ঙ্কর “জল বোমা”-য় পরিণত হতে পারে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চিনের সামরিক হুমকি যেমন রয়েছে, তার থেকেও বড় বিপদ এই জলবাঁধ। এটা অরুণাচলের অস্তিত্ব ও জীবনযাত্রা মুছে ফেলতে পারে।” চিন ২০২৪ সালে এই প্রকল্পের জন্য ১৩৭ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে। বাঁধটি সম্পূর্ণ হলে তা হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প— ৬০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে এই একটিই বাঁধ থেকে।
Read more – রাশিয়ার ‘তেলবোমা’ অ্যান্টার্কটিকায় : বিশ্বশক্তির নতুন সংঘাতের ইঙ্গিত !
সবচেয়ে চিন্তার বিষয়, চিন কোনও আন্তর্জাতিক জল চুক্তির অংশ নয়। তাই বাঁধ থেকে ঠিক কতটা জল ছাড়া হবে, তার কোনও নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে নেই। অরুণাচল, অসম বা বাংলাদেশ— যেকোনও সময় প্রবল বন্যার মুখে পড়তে পারে এই অঞ্চলগুলি। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, যদি হঠাৎ করে বিপুল জল ছাড়ে চিন, তাহলে সিয়াং নদীর তীরবর্তী গোটা অঞ্চল ভেসে যেতে পারে।
তবে এই বিপদের মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। প্রেমা খাণ্ডু জানিয়েছেন, ভারত সরকার সিয়াং আপার মাল্টিপারপস প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছে। এই প্রকল্পে অনুমোদন মিললে, তা বাঁধ হিসেবে কাজ করবে ও চিনের জল ছাড়ার প্রভাব অনেকটাই রোধ করতে পারবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধু বন্যা নয়, সেচ, পানীয় জল ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও উপকার মিলবে অরুণাচল সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে। শেষ কথা, চিনের জল রাজনীতি এখন শুধু কূটনীতি নয়— এক বাস্তব হুমকি। ভারত কতটা প্রস্তুত, তার ওপরই নির্ভর করছে এই বিপদের মোকাবিলা।